দূরযাত্রা রিপোর্ট ॥ ঝালকাঠিতে গ্রেফতার আতংকে হরতাল অবরোধে মাঠে নামতে পারছে না জেলা বিএনপি। বিশেষ করে বিএনপির নিস্ক্রিয় গ্রুপটিকে মূল্যায়ন না করায় তারা সক্রিয় না হওয়ায় জেলা বিএনপি আরো বেশি দুর্বল হয়ে পরেছে বলে তৃনমুল বিএনপির ধারনা। বিএনপি জামায়াতের ডাকা গত ৩ দিনের অবরোধ কর্মসুচীতে ঝালকাঠি শহরে কোন প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। বরং শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের তৎপর থাকতে দেখা গেছে। দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালতে সব কার্যক্রম ছিল স্বাভাবিক। কর্মসূচীতে ঝালকাঠি শহরে বিএনপি জামায়াতের কোন নেতাকর্মীদের তৎপরতা ছিল না। গ্রেফতারের ভয়ে গাঢাকা দিয়েছে বেশীর ভাগ নেতাকর্মী। এমনকি ঝালকাঠি শহরের বাসা বাড়ি ছেড়ে গ্রামগঞ্জে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে থাকছে অনেক নেতা কর্মী। দিনের বেলাও রাস্তাঘাটে দেখা মেলে না জেলা বিএনপি নেতাদের। গত শুক্রবার নলছিটি উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি হেলাল খানকে গভীর রাতে গ্রেফতার করে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি থানা পুলিশ।
তৃণমুলের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে দলীয় এমপি প্রার্থী ও জেলা নেতৃবৃন্দের নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে। কারণ মাঠে এই সময়ে তাদের পাশে না পাওয়ায় তৃণমুল কর্মীরা অবরোধ হরতালের কর্মসূচিতে মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছেনা। তাই কর্মীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোষ্ট দিয়ে ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন। তারা বলছে নেতারাই পালিয়ে থাকছে। তাদের দেখা না পেয়ে আমরা কাদের দিক নির্দেশনায় গ্রেফতার ও হামলার ঝুকি নিয়ে কাজ করবো। তাছাড়া আমাদের মাঠে থাকতে হলে খাওয়া দাওয়া খরচের বিষয় আছে। এগুলো নেতৃবৃন্দ ব্যবস্থা না করায় আমরাও নিরাপদে সরে আছি।
অবরোধের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল এবং পটুয়াখালী সড়কের নলছিটি অংশের কিছু স্থানে বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কিছুটা তৎপরতা থাকলেও তা ছিল খুবই কম সময়ের জন্য। কিন্তু নলছিটি থানা পুলিশ গিয়ে নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এছাড়া ঝালকাঠি বিশ্ব রোড কলেজ মোড় বা রাজাপুরসহ বেকুটিয়া ফেরিঘাটের সড়কে অবরোধের কোন চেষ্ঠাই ছিলনা। এ দিকেও পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা ছিল তৎপর।
নাশকতা এড়াতে শক্ত অবস্তানে রয়েছে ঝালকাঠি জেলা পুলিশ। অপরদিকে জ্বালাও, পোড়াও, অগ্নিসংযোগ, গাড়ী ভাংচুর এবং হরতাল অবরোধ প্রতিরোধে জেলার সর্বত্র বিভিন্ন স্পটে মোটর সাইকেল মোহড়া দিয়েছে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। ঝালকাঠি মহিলা কলেজের সামনে, ফায়ার মোড়, বাস ষ্ট্যান্ড, সাধনার মোড়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সরকারী দল ও অঙ্গ সংগঠনের তৎপরতা দেখা যায়।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুবিন জানান, আওয়ামীলীগ শান্তি সমাবেশের নামে মহড়া দিয়ে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাচ্ছে এবং হুমকি ধমকি দিচ্ছে। অপরদিকে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। ২৯ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ২৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুরাতন গায়েবী মামলায় আসামী করেছে। তিনি আরো বলেন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মামলা-হামলার ভয় দেখাচ্ছে। এ সবের মধ্যেও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে আছি থাকবো বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত।
ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নেতৃবৃন্দ জানান, আমরা নাশকতারোধে এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মাঠে সজাগ রয়েছি। বিএনপি জামায়াত কর্তৃক যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা শক্ত হাতে প্রতিরোধ করা হবে।