দূরযাত্রা রিপোর্ট ॥ ঝালকাঠি বিআরটিএ অফিসে লাইসেন্স আবেদন করলে ফাইল চলে যায় দালালের কাছে। আবেদনকারিকে জানানো হয় আপনার আবেদনপত্রে সব কাগজ নেই। আপনি এই নম্বরে যোগাযোগ করেন। আমি সব ওকে করে ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে দিব। এমনই এক দালাল ঝালকাঠির বিআরটিএ অফিসে বেশ পরিচিত নজরুল ইসলাম। পটুয়াখালির এই ব্যক্তি ঝালকাঠিতে এখন বিআরটিএ অফিসে দালালি করে ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে দিচ্ছে। অফিসে তার প্রবেশ নিষেধ থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। তার অফিসে অবাধ বিচরন। এমনকি অফিসে রক্ষিত আবেদনকারির ফাইল ও কাগজপত্র নিয়ে বাইরে কাজ সেরে আবার দিয়ে যান। সব কিছুই ওপেন সিক্রেট। কিন্তু তারপরেও কর্তৃপক্ষ এই চিহ্নিত নজরুলের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়নি।
বরিশালের একজন প্রাইভেট গাড়ি চালক মো. সোহেল চৌধুরী। গতকাল সোমবার তিনি আসেন ঝালকাঠিতে দালাল নজরুলের সাথে দেখা করতে। উদ্দেশ্য লাইসেন্স করিয়ে দেয়ার কথা বলে এ পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে হয়রানী করছে। কিন্তু লাইসেন্স দিচ্ছেনা। গাড়ি চালক সোহেল জানান, গত বছর আমি ঝালকাঠি বিআরটিএ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করি। এর ২ মাস পর নজরুল আমাকে ফোন দিয়ে জানায় আমার আবেদনে ত্রুটি থাকায় নীচে পরে আছে। তারপর আমি ঝালকাঠি এসে তার সাথে বিআরটিএ অফিসে দেখা করি। এডি স্যারের রুমে প্রবেশের আগে বড় রুমে তার সাথে কথা হয়। তখন অফিসের একজন স্টাফ যিনি এখনো আছেন (নাম অজ্ঞাত) তিনি আমাকে বলেছে নজরুল আরেক জনের পরিবর্তে আসছে। তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এরপর এতোদিন পরেও নজরুল আমাকে লাইসেন্স না দিয়ে হয়রানী করছে। এ পর্যন্ত সে অফিস, ডোভ টেষ্ট ও ব্যাংক খরচ মিলেয়ে আমার কাছ থেকে মোট ১২ হাজার ৫শত টাকা নিয়েছে। সোমবার তাকে ঝালকাঠি এনআরবিসি ব্যাংকের সামনে পেয়ে ধরে অফিসে নিয়ে যাই। তখন আমিসহ আরো ২ জনের সামনে নজরুল আমার ফাইলসহ কাগজপত্র অফিস ষ্টাফ নুর ইসলামের কাছে গতকাল সোমবার জমা দেয়। এসময় আমার কাগজপত্রের অফিস ফাইল কি ভাবে নজরুলের কাছে তা নিয়ে নুরইসলাম কোন প্রশ্ন করেনি। এরপর এডি স্যার মাহাবুব রহমানের স্মরনাপন্ন হলে তিনি নজরুলের সামনে আমাকে বলেন, আপনি কাগজপত্র গুছিয়ে দিন। আমি লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিব। এরকম একই অভিযোগ করেন বাকেরগঞ্জের সাদ্দাম হোসেন। তিনি জানান, ৬ মাস আগে তার কাছ থেকে ৮ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে নজরুল হয়রানী করছে। তার সাথে থাকা আল মামুন নামের আরেক জন অভিযোগ করেন সাত মাস আগে নজরুল ৯ হাজার টাকা নিয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স দিচ্ছেনা।
এ প্রসঙ্গে নজরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন জবাব না দিয়ে নিরব থাকেন। বিআরটিএ অফিসে আবেদন করলে নজরুল কি ভাবে জেনে আবেদনকারিকে ফোন দেয়। তার কাছে কি ভাবে ফাইল থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে ঝালকাঠি সহকারি বিআরটিএ কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মাহাবুব রহমান বলেন, সেটা আমি জানিনা। যারা অভিযোগ করেছে তাদের সাথে কথা হয়েছে। তাদের বলেছি নজরুলের সাথে যোগাযোগ না করতে।