-নার্গিস আক্তার
ইসলাম পাড়া গোপালগঞ্জ।
এক বিয়ে বাড়িতে খাওয়া দাওয়া হচ্ছিল। বেশ মজার মজার খাবার। দুঃখের বিষয় কুকুর বিড়াল দাওয়াত পায়নি। এখন কুকুর
বিড়ালকে বলছে জমিদার বাড়িতে বিয়ে।
আমাদের তো দাওয়াত দেয়নি কেমন করে যাব। এখন বিড়াল বলছে কুকুরকে দাওয়াত দেয়নি তুই কেমন করে যাবি। আমাকে
না জমিদারের বউ দাওয়াত করেছে, তাই আমি বিয়ে বাড়িতে যেতে পারবো। তুই তো আর যেতে পারবি না। কুকুর বললো
বিড়ালকে আমাকে যখন দাওয়াত দেয়নি তোকে কেন দাওয়াত দিল! তখন বিড়াল বলে ,আমি তো ওই বাড়ির ইঁদুরগুলো মেরে
ফেলি। ওদের উপকার করি তাই আমাকে দাওয়াত দিয়েছে। তোকে দাওয়াত দিবে কেন?
তখন কুকুর বলে কি বলিস বিড়াল ভাই? আমি তো ওই বাড়িতে রাতে পাহারা দেই ঘেউ ঘেউ করি সারারাত ঘুম পড়ি না।
জমিদারের সবকিছু পাহারা দেই আমাকে দাওয়াত দিতে ভুলে গেল। কুকুরটা খুব চিন্তা করছে মাথায় বারবার চুলকাচ্ছে ,গা
নড়াচ্ছে ভাবছে এখন বিড়াল কে সে কি বলবে? মনে মনে চিন্তা করলো আর বিড়ালকে বলবো আমি ওই বাড়ি পাহারা দেই,
আমাকে দাওয়াত দিয়েছে এইতো সবেমাত্র। এখন বিড়াল বলল কুকুর ভাই তোমাকে দাওয়াত দিয়েছে তাহলে তুমিও যাবা।
বিড়াল মনে মনে ভাবে আমার ভাগ তো কম হয়ে যাবে কুকুর যদি যায় ও সব খাবার খেয়ে ফেলবে। তখন আমার কপালে কিছুই
জুটবে না। আমি কি হা করে চেয়ে থাকবো? কুকুর বিড়াল দু'জনে চিন্তা ভাবনা করে বলল, চল আমরা একসঙ্গে যাই। বিড়াল
বললো আচ্ছা ঠিক আছে আর মনে মনে ভাবলো আমি তো ওদের ঘরে ঢুকতে পারবো কুকুর তো আর ঘরে ঢুকতে পারবে না।
আমি ওকে ঘরের ভিতরের খাবার গুলি খেয়ে ফেলবো, নয় তাকিয়ে থাকবো আমাকে একটু খাবার কি দিবে না? দু'জনে
একসঙ্গে রওনা দিল । কুকুর মনে মনে ভাবল আমি তো হাড়গোড় খেতে পারব ওসব বিড়াল তো খেতে পারবে না।
বিড়াল আমার সঙ্গী হয়ে চলুক সমস্যা কোথায়? আর বিড়াল ভাবল আমি তো হার খেতে পারব না ঘরে গিয়ে বিয়ে বাড়ির
খাবার একটা খেয়ে নেব। সবাই খাচ্ছিল এখন কুকুর আর বিড়াল এসে হাজির হলো। চতুর্দিকের ছড়ানো ছিটানো হাড় গুলো
কুকুর খেতে শুরু করলো বিড়াল মনে মনে খুব কষ্ট পেল। আমি কেন ওর মতো হলাম না? আজ হাড়গুলো খেতে পারতাম এখন
কি করা যায়? কুকুর হাড় খেতে লাগলো বিড়াল বিয়ে বাড়ির লোকজনের ভিড়ের মধ্যে ঘরে ঢুকে গেল চুপ করে বসে রইল।
বিড়ালের বসা দেখে ছোট ছোট বাবুরা বলল বিড়ালটা তো খুব সুন্দর নরম ভদ্র। ছোট এক বাবু খাওয়া শেষ টেবিল থেকে
পেলেট টা নিয়ে বিড়ালের সামনে দিল। বিড়াল চেটে চেটে খেতে শুরু করলো বাবুটি আত্মহারা হয়ে বিড়ালের দিকে তাকিয়ে
থাকলো। বিড়াল পেট ভরে খেয়ে বাড়ি চলে আসলো! এখন কুকুর ভাবলো আমার তো পেট ভরে গিয়েছে বিড়াল ভাই গেল
কোথায়? ওকে খোঁজার দরকার। অনেকক্ষণ বিড়ালের জন্য কুকুর ভাই অপেক্ষা করলো। কিন্তু দেখা পেল না দু'জন বাড়ি
ফিরে গেল। আবার দেখা হল কুকুর বিড়ালকে বলল তুই কি খেয়েছিস? তুই তো আবার হাড়গোড় খেতে পারিস না। আমি না পেট
পুরে খেয়েছি আবার যাব। বিড়াল কুকুরকে বলে আমি তো ওই বাড়ির ইঁদুর মারি তাই আমাকে প্লেটে খাবার দিয়েছে তুই তো
খেয়েছিস মানুষের খাওয়া হাড়গোড়। যা ধুলো মাখা মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলেছে। ওটাই খেয়েছিস আমার মতো তো প্লেটে
খাবার খেতে পারিস নি। আমি আসলে খুব ভাগ্যবান। তোর জন্য খুব দুঃখ হয়। কুকুর মন খারাপ করে ঘেউ ঘেউ করে ঝগড়া
করে এবং নিজেকে বড় অসহায় মনে করে।