দূরযাত্রা রিপোর্ট ঝালকাঠিতে রহস্যজনক এক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শহরের জেলেপাড়া এলাকার সজল দেবনাথ (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্র, সোমবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মারা যায়। সজল দেবনাথ ঝালকাঠি সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন দেবনাথের ছোট ছেলে। সজলের পরিবার জানায়, তিনি রবিবার রাতে জগদ্ধাত্রী পূজার উৎসবে যোগদান করে বাসায় ফিরেন এবং ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হঠাৎ গোঙ্গানীর শব্দ পেয়ে দেখি সজিবের পাঁ বাঁধা। এসময় সজিবের কথিত প্রেমিক তিথিকে খাটের নিচে পাওয়া যায়। পরে দ্রুত তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে সজল মারা যায়। সজলের বড় বোনের দাবি অনুযায়ী, তার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, সজলের বান্ধবী তিথির বাসা থেকে আনা নুডুলস খাওয়ার পরই সজলের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তার ধারণা, নুডুলসে কোনো বিষাক্ত পদার্থ থাকতে পারে, যা সজলের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। প্রেমিকা তিথি জানান, দুই বছর ধরে সম্পর্ক চলছে। জগদ্ধাত্রী পূজার দিন সজল ও তিথি একসঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং তিথি তার বাসা থেকে সজলের জন্য নুডুলস নিয়ে আসেন। পরে সজল আচরণ খারাপ করলে একপর্যায়ে তিথিকে শারীরিক নির্যতান করে। কিন্তু ঘটনার দিন রাতে সজলের সাথে তিথি রাত্রিযাপন করলেও তা এড়িয়ে যায়। তিথি আরো বলেন সজল নেশা করতো তাকে অনেক নিষেধ করেছি আমার কথা শোনেনি। আমাকে সব সময় মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। সজল আমার কাছে নুডুলস খেতে চেয়েছে । তাই আমি বাসায় নুডুলস রান্না করে তার জন্য এনে ছিলাম । সেই নুডুলস আমিও খেয়েছি সজল খেয়েছে। তিনি আরো বলেন , এক ছেলের সাথে আমাকে কথা বলতে নিষেধ করেছে। কিন্তু আমি ঐ ছেলের সাথে কোন কথা বলিনা। আমাকে রাতে যে মারধর করে তাতে আমার মুখ মন্ডলে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে তিথির মা শিউলি এদবর বলেন আমার মেয়ে বান্ধবীদের বাসায় যায় তাই খোঁজ নেইনি। নেশা করলে মানুষ যে ভাবে হাটে সেই ভাবে রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাড়িতে গিয়েছে । নিহত সজলের বড় ভাই উজ্জ্বল দেবনাথ বলেন, অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত সারে তিন টায় আমরা সজলকে হাসপাতালে নিয়ে আসি । হাসপাতালে সজলের পেট ওয়াস করে ভর্তি করে ডাক্তার। তখন সজল সুস্থ ছিল আমাদের সাথে কথা বলেছে। সকাল বেলা হঠাৎ সজলের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় ডাক্তার তাকে বরিশালে রেফার করে। আমরা বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি এ সময়েই আমার ভাই মারা যায় । ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এটিএম মেহেদী হাসান সানি জানান, সজলকে গভীর রাতে হাসপাতালে আনা হয় এবং দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা চললেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সজলের মৃত্যু রহস্যজনক বলে মনে হলেও ময়নাতদন্ত ছাড়া সঠিক কারণ নির্ধারণ সম্ভব নয়। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।