12 December- 2024 ।। [bangla_date]


ঝালকাঠি তাঁতের গামছার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা

হাসনাইন তালুকদার দিবস, ঝালকাঠিঃ ঝালকাঠির গামছার কদর সারা বিশ্বে। এক সময় এই গামছা জেলার ঐতিহ্যহিসোবে উপহার দেয়া হতো আগত অতিথি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীকে। শহর থেকে পশ্চিমে বাসন্ডা নদী তীরের  বাসন্ডা গ্রাম তাঁতের খটরখটর শব্দে মুখরিত থাকত। এক শতাব্দী আগে এই বাসন্ডা এলাকা জুড়ে প্রায় ২০০ তাঁতি পরিবার ছিল, যারা হস্তচালিত তাঁতে রঙিন সুতায় শাড়ি, লুঙ্গি এবং গামছা বুনত। মহাজনদের পদচারণে এবং তাঁতের শব্দে এখানকার গামছা কারিগরদের বাড়ি জমজমাট থাকত। তখন গোটা দেশে ঝালকাঠির তাঁতপণ্যের গৌরব ও পরিচিতি ছিল। ৫০ বছর আগ থেকে এখানকার গণি মিঞার গামছা ছিল দেশের গন্ডি পার হয়ে বিদেশে। ঢাকা, কুষ্টিয়া, নারায়নগঞ্জ, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইলেকট্রিক মেশিনে গামছা বুননের কাজ শুরু হয় বেশকিছু বছর আগে। আর সেই থেকেই একে একে বন্ধ হয়ে গেছে ঝালকাঠির তাঁত পল্লীর গামছা তৈরির কারখানাগুলো। তবে দেশ-বিদেশে ঝালকাঠির গণি মিঞার গামছার বেশ কদর থাকায় বাসন্ডা গ্রামের একটি দুটি পরিবার এই শিল্পটি ধরে রেখেছে। বাকিরা চলে গেছে অন্য পেশায়। বছর দশেক আগে গনি মিঞা বার্ধক্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। ঐতিহ্য রক্ষার খাতিরে লোকসান দিয়েও বাবার তাঁত মেশিনে গামছা বুনতেন গনি মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিন মিঞা। কিন্তু উৎপাদন খরচ বাড়ায় গত এক দশক ধরে প্রায় বন্ধ ছিলো হস্ত চালিত এই তাঁত শিল্পটি। বর্তমানে বিদ্যুৎ চালিত সয়ংক্রিয় মেশিন স্থাপন করে উৎপাদন শুরু করেছে রঙিন গামছা। আর এতে জেল্লা ফিরেছে ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী গামছা শিল্পে। কারিগররা জানান, আগে তারা হস্তচালিত তাঁত মেশিনে দিনে ৩ টি গামছা বুনতেন। আর এখন প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ পিচ বিভিন্ন সাইজের গামছা উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে বাজারের চাহিদা মিটানো সহ শিল্পটি বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে এই তাঁত শিল্পে লেগেছে আধূনিকতার ছোঁয়া। দেশে এখন ইলেকট্রিক সয়ংক্রিয় মেশিনে গামছা তৈরি হয়। আর গণি মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিন জেলার ঐতিযহ্য ধরে রাখতেই ইলেকট্রিক তাঁত মেশিন বসিয়ে উৎপাদন শুরু করেছে। প্রয়াত গনি মিয়ার ৪৫ বছর বয়সী ছেলে নাসির উদ্দিন মিয়া বলেন, বাবার মৃত্যুর পরেও আমি ও আমার মা হালিমা বেগম প্রতি সাড়ে ৩ ঘণ্টায় দুটি তাঁতের গামছা তৈরি করতাম। মা এখন সুতা টানতে পারেন না। তাই এখন মেশিন কিনে আবার ঘুর দাড়াচ্ছি। কোলকাতার উত্তর চব্বিশ পরগনার কাপড় ব্যবসায়ী উত্তম কুমার নাথ বলেন,ঝালকাঠির গণিমিয়ার তাঁতের গামছা একসময় দিল্লিতেও পাওয়া যেতো। আমরা কোলকাতায় এখনো বিক্রি করি। গোটা কোলকাতায় ঝালকাঠির গনি মিয়ার তাঁতের গামছার এখনো কদর রয়েছে। বিধাননগর থেকে কৃষ্ণনগর ও লালগোলা রুটে যাত্রীবাহী ট্রেনে হকাররা বাংলার গামছা নামে ঝালকাঠির গণি মিঞার গামছা এখনো বিক্রি করে।  ঝালকাঠি বিসিক শিল্পপনগরীর উপ ব্যবস্থাপক আলী আজগর নাসির বলেন, গামছা ঝালকাঠির একটি শিল্প। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের চেষ্টা থাকবে। কোনো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিসিকে ঋণের আবেদন করলে তাকে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করি। গনি মিয়ার প্রতিষ্ঠান যদি আবেদন করে তাহলে আমরা ঐ প্রতিষ্ঠানে ঋণ সহায়তা দিবো।

Please Share This Post in Your Social Media




More News Of This Category




Mobile : 01712387795

Email:dailydurjatra@gmail.com
টপ
২০১৮ সনে নলছিটিতে হামলার ঘটনায় থানায় দেয়া অভিযোগে জেবা খানের ক্ষোভ প্রকাশ নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা বন্ধ হবার উপক্রম নলছিটিতে খেলার মাঠ পার্ক নির্মানের দাবিতে সভা অনুষ্ঠিত ঝালকাঠিতে কৃষকদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষন কর্মশালা শুরু ঝালকাঠিতে হাসিনার ল্যাসপেন্সাররা ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে ঝালকাঠি মানববন্ধনে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঝালকাঠি ইজিবাইক মালিকরা একাধিক লাইসেন্সের নবায়ন পেতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন রাজাপুরে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন রাজাপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত কাউখালীতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে মানববন্ধন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত