দূরযাত্রা রিপোর্টঃ বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম দর্শনীয় স্থান দুর্গাসাগরে এখন দর্শনার্থীদের উপচে পরা ভীড়। স্বরুপকাঠি-বরিশাল সড়কের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা নামক স্থানে এই দুর্গাসাগর দিঘী। গেটের প্রবেশ মুখে বিশাল বট গাছের ছড়িয়ে থাকা ডালপালার সৌন্দর্য দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে শুরুতেই।
প্রাকৃতিক সৌন্দের্যে ঘেরা বরিশাল ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধশালী। ভ্রমন পিপাসুদের কাছে এই জেলার অন্যতম অবসর বিনোদনের স্থান দুর্গাসাগর দিঘী। প্রতিদিন শত শত মানুষ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসে এখানে। ২৩৩ বছরের বেশি সময়ের ঐতিহ্য রয়েছে এ দিঘীর। বরিশালের শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
১৭৮০ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন রাজা শিব নারায়ন প্রজাদের পানির সংকট নিরসনে দিঘীটি খনন করেন। রাজার মায়ের নাম দুর্গা দেবীর নামানুসারে দিঘীটির নামকরণ করা হয়। কথিত আছে রানী দুর্গাবতী একবারে যতদুর হেটে গিয়ে ছিলেন ততদুর খনন করা হয়। সাগর নাম যুক্ত করা হয়েছে এর বিশালতা অনুভব করার জন্য।
এর মোট জমির আয়াতন ৪৫.৫৫ একর। এরমধ্যে মূল দিঘী২৭.৩৮ একর। দিঘীর চারপাশে ১.৬ কিলোমিটার হাটার পথ আছে। বিশাল এ দিঘীর মাঝখানে রয়েছে দ্বীপের মতো একটি ছোট টিলা। তবে এ দ্বীপে যাবার অনুমতি নেই। কারণ এখানে পাখিদের অভয়াশ্রম হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। দিঘীর ৩ পাশে ৩টি প্রশস্ত ঘাটলা আছে। সম্পূর্ন দিঘীটি উঁচু সিমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পবিত্র স্নানের উদ্দেশ্যে এখানে সমবেত হয়। এ উৎসবের সময় বিশাল মেলা বসে।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এর ভিতরের পরিবশ সুন্দর ও উন্নয়নে জেলা প্রশাসন বেশ কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এরমধ্যে বিনা টিকিটে শিশুদের জন্য রাইড নির্মান, দর্শনার্থীদের বিশ্রামাগার ও খাবার জন্য পাকা ঘর, দিঘীর পাড়ে বসার বেঞ্চ করা হয়েছে। ময়ুর পাখি, বানর, হরিণসহ বিভিন্ন পশুপাখি রাখা হয়েছে খাচার মধ্যে। যা শিশুদের আরো আনন্দের খোরাক যোগায়। চারপাশের বিভিন্ন ফল ও বড় বড় বনজ গাছ গাছালি যেমন একদিকে
ছায়া দিচ্ছে তেমনি পাখিদের জন্য তৈরী হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়স্থল।