হাসনাইন তালুকদার দিবস, ঝালকাঠিঃ এই দেশে দুধের চেয়ে ঘোল বেশি বিক্রি হয় আর সেই ঘোল মিশে গেছে এখন দায়িত্ব আর দুর্নীতির মিশেলে। দুধের স্বাদ ঘোলেও না মিটিয়ে একেবারে বরাদ্দের পুরো টাকাই লাপত্তা।
দৈনিক দুরযাত্রার অনুসন্ধানে আজ আমরা ঝালকাঠি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার দপ্তরে সেই ঘোলাটে চিত্র তুলে ধরছি। যেখানে বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে শিশুদের মুখে দুধ উঠেনি, হয়নি র্যালিসহ কোনো অনুষ্ঠান। ঘটেছে অনিয়ম দুর্নীতি এবং অর্থ লোপাট। বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে যখন দেশের অন্য প্রান্তে শিশুদের হাতে দুধ পৌঁছায়, তখন ঝালকাঠিতে সেই দুধ পৌঁছায়নি কারও কাছেই। তাই প্রশ্ন উঠেছে বরাদ্দের ২ লাখ ৮ হাজার টাকা গেল কোথায়।
এর জবাবে জেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানের সাথে তার নানা অনিয়মের বিষয়ে আলাপকালে তিনি বিশ্ব দুগ্ধদিবস পালন না করার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি যে কারন দেখিয়েছে তা সবই ছিলো হাস্যকর। তিনি বলেন, বেশ কদিন ধরে বৃষ্টি, সামনে ঈদ এবং র্যালির টি-শার্ট তৈরি
হয়নি এখনো। তাই দিবস পালন করা হয়নি। কর্মকর্তা এই তিন কারন উল্লেখ করে আরো বলেন,ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প থেকে দেয়া বরাদ্ধের ২ লাখ আট হাজার টাকা আমার কাছে গচ্ছিত আছে। আগামীতে ঐ টাকা দিয়ে বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের কর্মসূচী পালন করবো।
সরেজমিনে গিয়ে যা পাওয়া গেছে তা হলো, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় যেন দুর্নীতির দুর্গে পরিণত হয়েছে। সরকারি অনুদান, খামার উন্নয়ন প্রকল্প কিংবা ভেটেরিনারি সেবার প্রতিশ্রুতি সবখানেই লেগে আছে দুর্নীতির ছাপ। সাধারণ খামারিরা একের পর এক অভিযোগ করছেন ঘুষ, হয়রানি এবং পক্ষপাতমূলক সেবা পাওয়ার কথা। খামারীরা জানিয়েছে, মাঠ পর্যায়ে কোন নজরদারি বা সহযোগীতা নেই এদের। খামারীরা নিজেরাই খামারের পশু পালন করে সমস্যার সমাধান করছে বাজারের ঔষধ বিক্রেতাদের পরামর্শে। তারা জানিয়েছে প্রানী সম্পদ বিভাগের কাউকে ডাকলে বা পরামর্শ নেয়ার জন্য আসতে বললেই টাকা দিতে হয়। তাই সরকারের এই দপ্তর যদি ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া হয়ে ওঠে, তবে ক্ষতির মুখে পড়বে এ জেলার প্রাণিসম্পদ খাত ও গ্রামীণ অর্থনীতি। এখন সময় এসেছে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার।