নলছিটি (ঝালকাঠি) সংবাদদাতাঃ সেতু আছে নেই সংযোগ সড়ক। তাই পারাপার হতে হয় মই দিয়ে। এই চিত্র শুধু নলছিটিতে নয়। জেলার ৪ উপজেলায় এ ভাবে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের লুটপাটের স্বাক্ষি হয়ে পরে আছে অনেক নির্মানাধীন সেতু। সাবেক এমপি আমুকে কমিশন নিয়ে সংস্লিষ্ট ঠিকাদারেরা এভাবে কাজ না করেই আত্মসাৎ করেছে কোটি কোটি টাকা। যারা সরকার পতনের পরেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। পালের গোদা আমু ধরা পরলেও ঠিকাদাররা নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।
নলছিটি উপজেলার অন্তত ৭টি সেতু ব্যবহার করে কয়েক হাজার মানুষ এভাবেই যাতায়াত করে। সেতু নির্মানের কবছর পার হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। অপরিকল্পিত সেতুগুলোর নির্মাণে সরকারি অর্থ লুটপাটের উদাহরণ বলছে স্থানীয়রা।
উপজেলার সরমহল হাশেমিয়া মাদ্রাসার সামনে গেলেই চোখে পড়ে এ চিত্র। সংযোগ সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে সেতুর পাশে পুরাতন সাঁকো ও মই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করছে এলাকাবাসী। এতে প্রায়ই ঘটছে দুঘর্টনা।
এলজিইডির তথ্য মতে, ২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২২ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৮ মিটার লম্বা এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ৭ জুলাই । ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করলেও অদ্যবদি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মান করেনি।
একই চিত্র বাইতারা স্কুলের সামনের নির্মিত সেতুর। ৪৮ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫২ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০ মিটার সেতুর কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১১ আগষ্ট । নির্ধারিত সময় শেষ হলেও দেখা মেলছেনা সংযোগ সড়কের। এমন চিত্রের দেখা মেলে সূর্যপাশা তালুকদার বাড়ি, সুবিদপুর হারুন অর রশিদ কলেজে,ফয়রা মাদ্রাসা,জোর আওরাবুনিয়া সিরাজ মুন্সীর বাড়ীর সামনে ও রানাপাশা ইউনিয়ন পরিষদ সামনের খালের উপর নির্মিত সেতুতে । সেতুগুলো সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্যবহার করতে পারছেন না এলাকাবাসীরা।বিগত কবছর আগে এসব সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও শেষ না হয়ে পরে আছে।
কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এসব সেতু নির্মিত হলেও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না হলেও এলজিইডি কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করছে। কবে নাগাদ এর কাজ মেষ হবে তা জানেনা কেহই। তাই মানুষের দূর্ভোগ লেগেই আছে। সেতুগুলো পারাপারে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের একমাত্র অবলম্বন মই ও সাকোঁ। সংযোগ সড়ক ছাড়া এ সেতুগুলো স্থানীয়দের কোন কাজে আসছে না। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বর্ষা মৌসুমে
ভোগান্তি বেড়ে যায়। কারো সাথে কোন সমন্বয় ছাড়া অপরিকল্পত ভাবে নির্মাণে কোটি কোটি টাকার সেতুর কাজ ফেলে রাকা হয়েছে। তাই এগুলো কাজে আসছে না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সেতু নির্মাণের নামে প্রকল্পের অর্থ লোপাটের অভিযোগ কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এলজিইডি ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী ও নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী সব দায় চাপাচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উপর। তবে এলজিইডি ঝালকাঠি ও নলছিটি প্রকৌশলীর নিকট সংযোগ ছাড়া নির্মিত সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম পরিচয় ও বরাদ্দের তথ্য চাওয়া হলে গড়িমসি করেন।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল কবির শিগ্রিই সংকট সমাধান করে সেতুর কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দেন। এ বিষয় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.শহিদুল ইসলাম ব্রিজ গুলো তদন্তপূর্বক দ্রুত চলাচল উপযোগী করার আশ্বাস দিলেও ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়াও ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় এলজিইডির বাস্তবায়িত বেশ কিছু প্রকল্পে রয়েছে এমন অনিয়মের অভিযোগ।