দূরযাত্রা রিপোর্টঃ বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের প্রভাবশালী নেতা ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি আমির হোসেন আমুর অন্যতম সহযোগী সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও জেলা কৃষক লীগ সভাপতি আবদুল মন্নান রসুলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের তিন মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী মন্নান রসুল রবিবার সকাল ১১ টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম তার জামিন আবেদন না-মজ্ঞুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিকে মান্নান রসুলের আদারতে আসার সংবাদে আদালত এলাকা ও আশেপাশে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থ্যা নেয়া হয়। পুলিশ ছাড়াও র্যাব, ডিবিকেও তৎপর থাকতে দেখা গেছে। মান্নান রসুলের উপর বিএনপিসহ সাধারণ মানুষের হামলার আশংকায় এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষতায় থাকা কালে পিপি পদে থেকে বিরোধী দল ছাড়াও সাধারন মানুষকে আদালতে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাই বিচার প্রার্থীরা তার উপর ক্ষিপ্ত ছিল।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মন্নান রসুল ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর আত্মগোপনে চলে যান। ঝালকাঠি জেলা বিএনপি অফিসে বোমার বিস্ফোরণ ও হামলা, জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের বাসায় হামলা ভাংচুর , আইনজীবী সমিতিতে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টিসহ একাধিক হামলা ভাংচুরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় ৬ টি মামলা হয়।
এসব মামলায় মান্নান রসুল হাইকোর্ট থেকে গত ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন। জামিনের মেয়াদ শেষে ৬টি মামলায়ই গতকাল রবিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করেন। জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম তিনটি মামলার শুনানী শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অবশিস্ট তিন মামলার শুনানী আগামী ১৮ মার্চ ধার্য্য করেন। আ. মন্নান রসুলের পক্ষে আদালতে শুনানী করেন, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. বনি আমীন বাকলাই। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর মাহেব হোসেন।
এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী আমির হোসেন আমুর পোষ্য পুত্র ছিল মন্নান রসুল। এই মান্নান রসুল ঝালকাঠি বার লাইব্রেরীতে নির্বাচন হতে না দিয়ে বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়ে ২২ আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। পুলিশ তদন্তে তা মিথ্যা প্রমানীত হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজকের তার পক্ষে জেলা বারের দুজন আইনজীবী মন্নানের ঘনিষ্ট বনি আমিন বাকলাই ও তপন কুমার রায় চৌধুরী জামিনের আবেদন শুনানী করেন। তাই আমরা এই দুজনার বিরুদ্ধে বারের কার্যনির্বাহী পরিষদ দ্রুত সিদ্ধান্ত নিব। এই মন্নানের নেতৃত্বে আমার বাসায় ৩ ঘন্টা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মোট ৬টি মামলা রয়েছে। আশা করি আমরা আদালতে ন্যায় বিচার পাব। গত ১১ বছর ঝালকাঠিতে কোন নির্বাচন করতে না দিয়ে আমুর প্রভাব খাটিয়ে তিনি বারের সভাপতি ও পিপি ছিলেন। যারা ইতিপূর্বে সুবিধা নিয়ে মান্নান রাসুলের পক্ষে জামিনের শুনানী করেছে তারা আইনজীবী হিসাবে নৈতিকতা হারিয়েছে।