মাসুম খান,ঝালকাঠি : ঝালকাঠি জেলা সদরের সুগন্ধা নদীর দক্ষিন পাড়ের গ্রাম চর কুতুবনগর। নদী বেষ্টিত গ্রামটিতে যাতায়াতে এখনও পাকা সড়ক তৈরি হয়নি। বাঁশের সাঁকোই পাড়াপাড়ের একমাত্র অবলম্বন। তবে গ্রামের মধ্যবর্তী সবচেয়ে সুবিধাজনক স্থানে বালু ভরাট করে উচু জমি তৈরি করে নির্মাণ করা হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। সেখানে অসংখ্য পরিবার নিজেদের ঠিকানা খুঁজে পেয়ে মহাআনন্দিত।
ভাঙন কবলিত বেড়ি বাঁধের কাছে অনেকেটা দুর্গম এই গ্রামটিতে নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাশের দুই গ্রামে পরে একটি স্কুল থাকলেও তা ৩ মাইলের বেশি দূরে অবস্থিত। তার ওপর কাঁদামাটির রাস্তা আর সাঁকো পারাপারের পথ হওয়ায় আশ্রয়ণসহ গ্রামের অনেক পরিবারই সেখানে শিশু সন্তানকে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে অনেক শিশুই প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়ছে। অনেকে আবার ভর্তিও হয়নি। ফলে প্রাথমিক পর্যায়েই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক শিশু।
নদী পাড়ের চরে দুর্গম গ্রাম, নেই পাকা রাস্তাঘাট। এ যুগেও সাঁকো পেড়িয়েই যাতায়াতাতের পথ। স্থানীয় গ্রামবাসী ছাড়াও এখানে রয়েছে আশ্রায়ণ প্রকল্পে থাকা জনবসতি। কিন্তু শিশুদের জন্য নেই কোন স্কুল। তিন মাইলের দুর্গম পথ হেঁটে যেতে হয় পাশের গ্রামের স্কুলে। ফলে অনেক শিশু পাচ্ছেনা প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ।
গ্রামের কৃষক আবুল ফকির বলেন, আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা ছাড়াও আরও প্রায় আড়াইশ পরিবার আমাদের গ্রামে বসবাস করছেন। প্রতি ঘরেই শিশুরা আছে। এই গ্রাম থেকে দুই তিন মাইল দূরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল। দূরত্বের কারণেই এ গ্রামের ছেলে-মেয়েরা স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে। শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থেই একটা স্কুল আমাদের জরুরি হয়ে পড়েছে। আশ্রয়নের বাসিন্দা বৃদ্ধা নূরবানু বেগম বলেন, আমাদের এখন একটা নিজস্ব ঠিকানা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এখন একটা স্কুল হলেই শিশুদের লেখাপড়া নিয়ে আমারা নিশ্চিন্ত হতে পারি।
তবে এসব জনগুরুত্বপূর্ন ও দুর্গম এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে স্কুল নির্মাণের সরকারি নির্দেশনা ইতোমধ্যেই হাতে পেয়েছেন জানিয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অশোক কুমার সমাদ্দার বলেন, এলাকাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে। প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি সদরের চরকুতুবনগর গ্রামটিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও অন্যান্য বাসিন্দা নিয়ে তিন শতাধিক পরিবারের বসবাস। যাদের দুই শতাধিক শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার বয়সী।