দূরযাত্রা রিপোর্টঃ- ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ১০০ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করন প্রকল্পের ৮ তলা নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ সারে ৫ বছরেও শেষ হয়নি। ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই শুরু হলেও ২০২৪ সালের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ চতুর্থ বারের মতো শেষ হয়েছে। কিন্তু কাজ শেষ করতে না পারায় এখনো হস্তান্তর করা হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামিম ভবনটি আগেই উদ্বোধন করিয়ে রাখায় এখন প্রশ্ন গণপূর্ত হস্তান্তরের আগেই কেন সাবেক এমপি আমুকে দিয়ে উদ্বোধন করানো হলো। মজার বিষয় হলো বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের মদদপুষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামিম
আহম্মেদ তৎকালীন আমীর হোসেন আমুকে দিয়ে এক বছর আগেই ভবনটি উদ্বোধন করিয়ে রাখেন। কারণ যাতে তিনি এখানে বসে যে দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তার কোন অভিযোগ আমু আমলে না নেন। ঠিক তাই হয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আপ্যায়ন বিল বাবাদ তিনি অর্ধ লাখ টাকা ভূয়া ভাউচার করা হয়েছে বলে শোনা যায়।যদিও আপ্যায়ন বিল বহণ করেছে ঠিকাদার কোম্পানী। আমু প্রীতির এই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এখনো হাল তবিয়তে। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দূর্নীতির অভিযোগ মন্ত্রনালয় ও দুদক তদন্ত করলেও শেষ পর্যন্ত তা চাপা দিতে সক্ষম হন। তার দূর্নীতির সংবাদ তুলে ধরায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচর ও মানববন্ধন করেন। এর প্রতিবাদে ঝালকাঠির প্রেসক্লাবসহ ৫টি সাংবাদিক সংগঠন একত্রিত হয়ে এই অযোগ্যও দূর্নীতিবাজ তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিচার ও বদলী দাবি করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদাান করে। শুরু হবার পর ১৮ মাসে এই প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও পার হয়েছে ৫ বছর। আসবাবপত্র, মেশিনারী, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও চিকিৎসা যন্ত্রাংশসহ লিফটের কাজ এখনো বাকী। মুল ভবনের কাজ শুরুর পর দুই দফায় নকশা বদলে তিন তলা বাড়িয়ে নবম তলার অনুমোদন নেয়া হয়ে ছিলো। এর বিপরীতে নির্মাণ বরাদ্দও বাড়ানো হয়ে ছিলো তিন দফায়। প্রথম দফায় প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিলো গেলো বছরের ৩০ জুন। তবে এখনো লিফট স্থাপন, আসবাবসহ সাজসজ্জার কাজ বাকি। প্রথম বরাদ্দ ছিল ৩৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পরে একই কাজের বরাদ্দ বাড়িয়ে ৪০ কোটি টাকা করা হয়। প্রথম ধাপের কাজের প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিল এরই মধ্যে তুলে নিয়েছে বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ ও জিএম কনস্ট্রাকশন। কাজের ধীরগতির মধ্যেই গত বছর আরও তিনতলা বাড়িয়ে
ভবনের নবম তলা পর্যন্ত নকশা ও বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলার কাজের জন্য আরও ৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়ে ছিলো। আর এই কাজ শেষ করা হয়নি বর্ধিত মেয়াদেও। এরপর আবারো ৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়। একই সাথে আরো এক বছর
প্রকল্পের কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ছিলো গনপুর্ত অধিদপ্তর। এনিয়ে দু’দফায় বদলেছে নকশা আর চার দফায় বেড়েছে অর্থ বরাদ্দ। ঝালকাঠি গণপূর্ত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি ২০২৪ সনের ৩০ জুন এই প্রকল্পের মেয়াদ (বর্ধিত) শেষ। আগামীতে সময় এবং বরাদ্দ আর বাড়ানোর সুযোগ নেই। এই সময়ের মধ্যে ভবনের সব কাজ শেষ করে ভবন হস্তান্তর করতে হবে ঠিকাদারকে। আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে কি না তা জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিএম কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মাওলা ফরহাদের সঙ্গে। তবে তিনি মুঠোফোনের কল রিসিভ করেননি। আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘করোনা মহামারির সময় নির্মাণসামগ্রীর দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী এবং শ্রমিক সংকটও ছিল। কিন্তু আমরা এ পর্যন্ত ৭০ কোটি টাকা ব্যয় করেছি। প্রায় ৩০ কোটি টাকা অগ্রীম খরচ করেছি। তাই আমাদের অর্থসংকট রয়েছে। আর এ কারণেই কাজের গতি কমিয়ে দিয়ে ছিলাম। তবে বর্তমানে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানাযায়, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি পাঁচতলা ভিতবিশিষ্ট সার্ভিস ভবনের কাজ শেষ। অগ্নিনির্বাপক পাইপ লাইন, টাইলস ও চারটি লিফট স্থাপনের জন্য যাবতীয় কাজ চলমান আছে। সূত্র জানায় লিফট স্থাপনের জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকায় ৫ বার টেন্ডার আহ্বান করেও কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। তাই বরাদ্দ বাড়িয়ে আবার টেন্ডার আহ্বান