দূরযাত্রা রিপোর্ট ॥ ঝালকাঠির বিভিন্ন দোকান ও বাজারে শনিবার রাতেও প্রচুর পরিমানে মুরগী মজুদ থাকলেও রবিবার সকাল থেকে মুরগী শূণ্য দোকান ও বাজার। সরকারের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া বিক্রেতারা মুরগি সরিয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে না দিলে এভাবেই বাজার শূণ্য করার হঠাৎ পরিকল্পনা নেয়। তাই এই অনৈতিক প্রক্রিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তারা। এভাবে কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি করে অসাধু বিক্রেতারা ফায়দা হাসিলের পায়তারা করছে বলে ক্রেতাদের দাবি।
রবিবার সকাল থেকে কোন মুরগিই পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। মুরগি কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা জানান, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দামের কারণে ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগি পাইকারি বিক্রি করছেন না খামারের মালিকরা। তাই বাজারের দোকানগুলোতে মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। পাইকারি যে দামে মুরগি কেনা হয়, প্রশাসন তার চেয়েও কম দামে মুরগি বিক্রি করতে নির্দেশ দিয়েছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দামে মুরগি বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে বলেও জানান বিক্রেতারা। তাই আপাতত মুরগি বিক্রি বন্ধ রেখেছেন বিক্রেতারা। মুরগির খামারিরা জানান, মুরগির খাবার ও ওষুধের দাম বেড়েছে কয়েকগুন। এদিকে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। তাই কম দামে মুরগি বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, অল্পদামে ব্রয়লার মুরগি সকল ক্রেতারই ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বিক্রেতারা বাজারে মুরগি উঠাচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। মুরগি কিনতে গিয়ে না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে ক্রেতাদের। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই মুরগি বিক্রি করতে হবে, বেশি দামে বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১৬ মার্চ রাত থেকেই ঝালকাঠির সকল বাজার থেকে মুরগী উধাও হয়ে গেছে।
কিন্তু আশ্চর্য্যওে বিষয় হলো ঝালকাঠি কৃষি বিপনন কর্মকর্তা মতিন মিয়া জানেইনা এ ঘটনার কারণ কি। কেন হঠাৎ মুরগি নেই বাজারে বা দোকানে। গতকাল টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরা তার কার্যালয়ে এ প্রসঙ্গে বক্তব্য নিতে গেলে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক বিষয়। দোকানের মুরগি শেষ হওয়ায় বিক্রেতারা আবার এনে বিক্রি শুরু করবে। পরে সাংবাদিকদের কাছে পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে তার এ বক্তব্য প্রচার না করার অনুরোধ জানান।
ঝালকাঠির ভাই ভাই পোল্ট্রি মুরগি দোকানের বিক্রেতা মো. মিলন জানান, আমরা ২০০ টাকা দরে কিনে এনে কিভাবে সরকারের নির্ধারিত ১৭০ দরে মুরগী বিক্রি করব। অপর দিকে মুরগীর হাটের সোনালী মুরগী বিক্রেতা সোহরাব মিয়া জানান, আমি ২৮৫ টাকা কেজি দরে কিনে এনেছি। ৩০০ টাকার নীচে মুরগি বিক্রি করলে খাব কি। এখন কিভাবে ১৭০ টাকায় বিক্রি করব। এ বিষয়ে ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকারের সহকারি পরিচালক সাফিয়া সুলতানা বলেন, কৃষি বিপনন বিভাগ, ১৭০ টাকা কেজি দরে মুরগী বিক্রির দাম নির্ধারন করেছে। কিন্তু এসব অসাধু বিক্রতারা তা না মেনে সংকট সৃষ্টি করতে জনসাধারনের ভোগান্তি বাড়াতে বাজার থেকে মুরগি সরিয়ে ফেলেছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।